রাজশাহী অঞ্চলের ২৫ উপজেলায় ভূগর্ভস্থ পানি তোলায় নিষেধাজ্ঞা

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও চট্টগ্রামের কয়েকটি এলাকা পানি সংকটাপন্ন অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর রক্ষা ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা (ওয়ারপো) পরিচালিত অনুসন্ধান ও জরিপের ভিত্তিতে গত ২৮ অক্টোবর এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, উত্তর-পশ্চিম হাইড্রোলজিক্যাল অঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার মোট ২৫টি উপজেলাকে পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টি ইউনিয়নকে ‘অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন’, ৪০টি ইউনিয়নকে ‘উচ্চ পানি সংকটাপন্ন’ এবং ৬৬টি ইউনিয়নকে ‘মধ্যম পানি সংকটাপন্ন’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।একই সঙ্গে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলাও পানি সংকটের কারণে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পটিয়া পৌরসভার ৫টি মৌজা অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এবং ৩টি মৌজা উচ্চ পানি সংকটাপন্ন হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। এছাড়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের সাতটি মৌজা অতি উচ্চ, নয়টি ইউনিয়নের ২৭টি মৌজা উচ্চ এবং আটটি ইউনিয়নের ৩০টি মৌজা মধ্যম পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।সরকারের নির্দেশনায় বলা হয়েছে,এসব এলাকায় পানি সম্পদের সুষম ব্যবহার ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। খাবার পানি ছাড়া অন্য কোনো কাজে নতুন নলকূপ স্থাপন বা ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিদ্যমান নলকূপ থেকেও পানীয় জলের বাইরে কৃষি, শিল্প কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে পানি তোলা যাবে না।এ ছাড়া ভূগর্ভস্থ পানি নির্ভর শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা যাবে না। নদী, খাল, বিল, পুকুরসহ প্রাকৃতিক জলাধারগুলোর শ্রেণি পরিবর্তন ও ভরাট করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব জলাশয় জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখতে এবং খাস জলাশয় ইজারা প্রদানে নিরুৎসাহিত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখতে হবে এবং অধিক পানি নির্ভর ফসলের পরিবর্তে পানি সাশ্রয়ী ফসলের চাষ উৎসাহিত করতে হবে। এতে পানি ব্যবহারে ভারসাম্য বজায় রাখা ও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর পুনরুদ্ধারে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।সরকারের এই পদক্ষেপকে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে অতিরিক্ত নলকূপের কারণে পানির স্তর প্রতি বছর নিচে নেমে যাচ্ছে, যা কৃষি, পরিবেশ ও জনজীবনের জন্য উদ্বেগজনক।প্রজ্ঞাপনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এসব নির্দেশনা অমান্য করলে বাংলাদেশ পানি আইন, ২০২৩–এর ধারা ২৯ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আইনি জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে।

Popunder Popunder_1 JS SYNC (NO ADBLOCK BYPASS)