বাগমারায় ৫৩টি সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল

সম্প্রতি বাগমারা সহ আশেপাশের এলাকায় হায় হায় সমবায় সমিতির অবৈধ কার্যক্রম মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এসব সমবায় সমিতির নিবন্ধন নেওয়ার সময় সদস্যেরে বাইরে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে না মর্মে অঙ্গিকার করা হলেও সেই অঙ্গিকার আর কেউ মানে না।তারা উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দিয়ে সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ সঞ্চয় হিসাবে জমা নিয়ে উচ্চ সুদে এই টাকা সমিতির বাইরে বিনিয়োগ করে থাকে। কিছু দিন ওই সমস্ত গ্রাহকের টাকার লভ্যাংশ প্রদান করা হলেও পরবর্তীতে সাধারণ গ্রাহকের পুরো টাকা আত্মসাত করে অফিস গুটিয়ে উধাও হয়ে যায় উচ্চ সুদের কারবারী হায় হায় সমিতি। এভাবে একের পর এক সমিতি লাপাত্তা হতে থাকে। শত শত ভুক্তভোগি গ্রাহক চলে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।তিনি অভিযোগ শুনে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পান। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রায় বারটি সমবায় সমিতিকে জরিমানা ও চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ্বন্ড প্রদান করেন। তারপরও থেমে থাকে না তাদের দৌরাত্ম। পরে সমবায় কর্মকর্তা কাউসার আলীকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ প্রদান করেন ইউএনও।পরে ইউএনও’র নির্দেশে বাগমারার মোট নিবন্ধিত ২৯৫টি সমবায় সমিতির কার্যক্রম যথাযত ভাবে তদন্ত করে ৫৩টি সমবায় সমিতির কার্যক্রমে অস্বচ্ছতা, বিধি ও নিয়মের বাইরে কার্যক্রম পরিচালনা উচ্চ সুদ হার আদায় ও সদস্যের বাইরে কার্যক্রম পরিচালনা সহ নানান অসংগতি পরিলক্ষিত হওয়ায় গত ৮ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্রের মাধ্যমে মোট ৫৩টি সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল করা হয়।বাতিলকৃত সমিতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে আল-আকসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতি, উদীয়মান গ্রাম উন্নয়ন সমিতি, ইউরেকা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতি, চাঁনপাড়া সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমিতি, জোতি সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতি, আলোর বাংলা গ্রাম উন্নয়ন সমিতি সহ মোট ৫৩ টি সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল করা হয়। জানা যায় সমিতিগুলো ২০১৯-২০ সালে নিবন্ধন পায়।সমবায় অফিস সূত্রে জানা যায় ওই সময় সমবায় কর্মকর্তা ছিলেন আলাউদ্দিন। তিনি উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জীবন নেছার স্বামী হওয়ায় এবং জীবন নেছা তৎকালীন দাপুটে ও বিনা ভোটের এমপি ইঞ্জি এনামুল হকের বন্ধবী হওয়ায় তাঁর প্রভাব খাটিয়ে জীবন নেছার স্বামী আলাউদ্দিন ব্যাপক ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে গণহারে এবং বাছবিচার না করে শতাধিক সমবায় সমিতিকে নিবন্ধন প্রদান করেন। ফলে বাগমারায় এই অযাচিত ঘটনার সৃষ্টি হয়।এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা কাউছার আলী জানান, অবৈধ ও বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য এসব সমবায় সমিতির নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। এখানে অনেক গুলোর অস্থিত্ব খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল ইসলাম জানান, কঠোর আইন প্রয়োগ করেও তাদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে সাধারন লোকজনকে সচেতন হতে হবে এবং তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। উচ্চ লভ্যাংশের প্রলোভনে পড়ে যত্রতত্র টাকা বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

Popunder Popunder_1 JS SYNC (NO ADBLOCK BYPASS)